ঘটনাটি - হজরত শায়খ আহমদ রেফয়ী ( রঃ ) ৫৫৫ হিজরী সনে হজ্জ সমাপন করিয়া নবীজির রওজা জিয়ারতের জন্য মদিনায় হাজির হন । সেখানে তিনি নিম্নোক্ত রওজার সামনে দাঁড়াইয়া নিম্নোক্ত দুটি বয়াত পড়েন । দূরে থাকা অবস্থায় আমি আমার রুহকে হুজুর সাঃ এর খেদমতে পাঠাইয়া দিতাম । সে ( রুহ ) আমার নায়েব হইয়া আস্তানা শরীফে চুম্বন করিত । আজ আমি শ্বশরীরে দরবারে হাজির হইয়াছি । কাজেই হুজুর আপন হস্ত বাড়াইয়া দেন যেন আমার ঠোট উহাকে চুম্বন করিয়া তৃপ্তি হাসিল করে । বয়াত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কবর হইতে হাত মোবারক বাহির হইয়া আসে এবং হযরত রেফায়ী উহাকে চুম্বন করিয়া তৃপ্তি হাসিল করেন ।
রাসূল ( সাঃ ) -এর সাথে তাঁর ছিল প্রেমের সম্পর্ক । একথা বলার পর রওযা শরীফ থেকে রাসুলের হাত উঠে আসে , তিনি সেই মোবারক হাতের সাথে মোসাফাহা করেছেন এবং চুমু দিয়েছেন । এর পরে সাথে সাথে মনে করেছেন এখন এই দরবারের সমস্ত মানুষ আমাকে বড় বুযুর্গ মনে করবে , আমার মনে অহংকার এসে যাবে , তাই সাথে সাথে তিনি মসজিদের দরজার উপরে শুয়ে পড়েন এবং বলতে থাকেন আমার ভিতরে অহংকার এসে গেছে , আপনাদের কাছে অনুরোধ আপনারা সবাই আমার উপর পাড়া দিয়ে পার হয়ে যান । এভাবে নিজের মধ্যে অহংকার আসার কোন সুযোগ দেননি । নিজেকে মানুষের সামনে তুচ্ছ করে রাখতে চেয়েছেন । সকলকে বড় মনে করেছেন , নিজেকে তুচ্ছ জেনেছেন । এই বুযুর্গেরই আর একটা ঘটনা । একটাকুকুরের গায়ে খোস পাচড়া । সমস্ত মানুষ কুকুরটাকে ঘৃণা করছে । কিন্তু তিনি ঐ কুকুরটাকে ধরে নিয়ে এসেছেন । ডাক্তার ডেকে চিকিৎসা করিয়েছেন । চিকিৎসা করে সুস্থ হওয়ার পর আপনজনদেরকে বলেছেন , তোমরা এই কুকুরটার দায়িত্ব নিয়ে নাও । কেউ তার দায়িত্ব নেয়নি । অবশেষে তিনি নিজের দায়িত্বে রেখেছেন । পরবর্তীতে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর কাছে এলহাম হয়েছে যে , তোমার যত মারেফাতের জ্ঞান , যত বুযুর্গী , তা ঐ কুকুরের খেদমত করার ওছীলায় । তিনি বলতেন । এই কুকুরটা আল্লাহর এক মাখলুক , আল্লাহর কাছে আমার যদি নাজাত না হয় , তাহলে আমার চেয়ে এই কুকুরটা বেশী দামী । দেখা গেল কোন মানুষকে নয় , একটা তুচ্ছ প্রাণী কুকুরকেও তিনি তুচ্ছ জানেননি । বুযুর্গানে দ্বীন বলেনঃ কোন মানুষকে তুচ্ছ মনে করার অবকাশ নেই । এমনকি আল্লাহর কোন প্রাণীকেও তুচ্ছ মনে করতে নেই । আল্লাহর কাছে কে দামী , তা আল্লাহ পাকই জানেন । কাজেই আমি আল্লাহর কোন মাঘলুক থেকে নিজেকে বড় মনে করতে পারি না । একজন বুযুর্গের ঘটনা আছে তার মুখে ছিল নীচের দিকে সামান্য কয়েকটা দাড়ি । আমরা অনেকে এরকম দাড়িকে ছাগলে দাড়ি বলে থাকি । কিন্তু এটা ঠিক নয় । দাড়ি তো দাড়িই । দাড়ি একটা মর্যাদার জিনিস । সেটাকে ছাগলের মুখের পশমের সাথে উদাহরণ দিয়ে ছাগলে দাড়ি বলা ঠিক নয় । যাহোক একদিন এক লোক ঐ বুযুর্গের সাথে উপহাস করার জন্য একটা ছাগল নিয়ে এসে বলল হুজুর । আপনার দাড়ি বেশী দামী না আমার ছাগলের দাড়ি বেশী দামী । বুযুর্গ বললেন , আমি এখন মন্তব্য করতে আমাকে জিজ্ঞাসা করো । মরার পরে যখন ঐ বুযুর্গের লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল , তখন সেই লোকটা হাজির হল । তখন লাশের যবান খুলে গেল যে , তোমার ছাগলের দাড়ির চেয়ে আমার দাড়ি বেশী দামী । কারণ আমার ঈমানের সাথে মৃত্যু হয়েছে , আমার নাজাতের ব্যবস্থা হয়ে গেছে । কিন্তু জীবদ্দশায় তিনি বলেননি , আমার দাড়ি বেশী দামী । একটা ছাগলকেও তিনি তুচ্ছ জানেননি । এভাবে সব ক্ষেত্রে নিজেদেরকে তুচ্ছ জেনে এবং তাওয়ায় ’ প্রদর্শন করেই বড়রা বড় হয়েছেন । নিজেকে বড় মনে করলে এবং বড়ায়ী দেখালেই বড় হওয়া যায় না।
বলা হয় যে , সে সময় মসজিদে নববীতে ৯০ হাজার লোকের সমাগম ছিল । সকলেই বিদ্যুতের মতো হাত মোবারকের চমক দেখিতে পায় । তাহাদের মধ্যে মাহবুবে ছোবহানী আব্দুল কাদের জিলানীও ছিলেন । সূত্র : ফাজায়েলে হজ্জ -২৫৮ পৃষ্ঠা এই ঘটনা নিয়ে তাবলীগ বিরোধীদের মাথা ব্যাথার অন্ত নেই ! আসুন দেখি এই ঘটনার উৎস কি - সাইয়েদ আহমাদ কবীর রেফায়ী ( রহ ) এর কবিতা শুনে যে , রাসূলুল্লাহ ( সা ) রওজা মুবারাক হতে হাত বের করেছিলেন , তা ইমাম জালালুদ্দিন সূয়তী ( রহ ) তার শায়েখ কামাল উদ্দিন থেকে তিনি শায়েখ শামসুদ্দিন জাযিরী থেকে , তিনি শায়েখ য্যনুদ্দিন থেকে তিনি শায়খ ইমুদ্দিন আহমদ ফারুকী থেকে তিনি তাঁর পিতা শায়েখ আবু ইসহাক ইবরাহীম থেকে ও তিনি তাঁর শায়েখ ইমুদ্দিন ওমর ( রহ ) এর সনদে তাঁর কিতাব " শরফে মুখতেম " নামক কিতাবে উল্লখে করেছেন । সাইয়েদ আহমাদ কবীর রেফায়ী ( রহ ) এর " আল - বুরহানুল মুয়াইয়াদ " নামক কিতাবের ভূমিকায় এই কাহিনী আছে । > 12
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই ভাইয়েরা ফাযায়েলের কিতাবের উপর কিরূপ খড়গহস্ত হয়েছে , তা মুটামুটি সকলেই দেখেছে , কিন্তু কেন তারা জালালুদ্দিন সূয়তী ( রহ ) এর বিরুদ্ধে আগে বলল না , কিন্তু তা কি আগে প্রয়োজন ছিল না .. ! ? 554 B / s এছাড়া ... # ' ইমাম আবু বকর বিন আবিদ্দুনিয়া ( রহ ) এর কিতাব " মান আ'শা বা'দাল মাউত " , # ' ইবনে কাসীর ( রহ ) এর ' আল - বিদায়া ওয়ান নিহায়া " , # ' হাফেজ আবু নয়ীম ইস্পাহানী ( রহ্ ) এর " হুলিয়াতুল আওলিয়া " , # ' ইমাম ইয়াসেফী এবং তাজুদ্দীন সুবকী ( রহ ) এর " তবাক্কাতুল কোবরা " - , # ' শাহ আব্দুল আজীজ ( রহ ) " বুস্তানুল মুহাদ্দেসীন " , # ' আবু বকর বাগদাদী ( রহ ) " তারীখে বাগদাদী " , # ' শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দেসী দেহলভী ( রহ ) " আরবা ঈন " , # ' ইবনুল কায়্যিম ( রহ ) এর " কিতাবুর রূহ " সহ অন্যান্য ইমাম এবং মুহাদ্দিসীনে কেরামের সমালোচনা কি আগে করা উচিৎ না , কারণ তাদের বইগুলোই তো কাহিনীগুলোর মূল সূত্র । আর উনারা কোরআন - হাদিস জানতেন না , নাকি জানার পরেও ইচ্ছে করে শিরক আর কুফরী প্রচার করেছেন . . . ?? ! ( নাউযুবিল্লাহ ) ।
Comments
Post a Comment